৭ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

নাইজেরিয়ায় কনেসহ ১৪ জনকে অপহরণ করল সশস্ত্র ব্যক্তিরা

অনলাইন ডেস্ক : সশস্ত্র হামলাকারীরা নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে রাতের অভিযানে ১৩ জন নারী এবং এক শিশুকে অপহরণ করেছে। পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশটিতে সাম্প্রতিক ধারাবাহিক গণ-অপহরণের এটি সর্বশেষ ঘটনা।শনিবার রাত থেকে রবিবারের মধ্যবর্তী সময়ে সোকটো অঙ্গরাজ্যের চাচো গ্রাম থেকে এক নববধূ ও তার দশজন ব্রাইডসমেডসহ (সহযোগী) বেশ কয়েকজনকে অপহরণ করা হয়েছে বলে এক স্থানীয় বাসিন্দা এএফপিকে জানিয়েছেন।গত কয়েক সপ্তাহে নাইজেরিয়ার বিভিন্ন স্থানে হামলাকারীরা শত শত মানুষকে অপহরণ করেছে।উগ্রপন্থী গোষ্ঠী ও স্থানীয়ভাবে ‘ব্যানডিটস(দস্যু)’ নামে পরিচিত অপরাধী চক্র—উভয়ের হুমকির মোকাবিলায় দেশটি লড়াই করে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক অস্থিরতা নাইজেরিয়া সরকারের ওপর চাপ বাড়িয়েছে। প্রেসিডেন্ট বোলা টিনুবু বুধবার দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন।মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও আফ্রিকার সর্বাধিক জনবহুল দেশটিতে খ্রিস্টানদের ওপর উগ্রপন্থীদের ‘হত্যাযজ্ঞ’ বন্ধ করতে সামরিক হস্তক্ষেপের হুমকি দিয়েছেন।চাচো গ্রামের বাসিন্দা আলিউ আবদুল্লাহি এএফপিকে জানান, ‘গত রাতে ডাকাতরা আমাদের গ্রামে হামলা চালিয়ে ১৪ জনকে অপহরণ করেছে, যার মধ্যে একজন নববধূ ও তার দশজন ব্রাইডসমেড রয়েছে।’নাইজেরিয়ার এই অঞ্চলে নববধূরা বিয়ের প্রথম রাতটি নিজের নতুন ঘরে ব্রাইডসমেডদের সঙ্গে কাটান। স্বামী পরে সেখানে এসে বসবাস শুরু করেন, এটি একটি প্রচলিত রীতি। আবদুল্লাহি জানান আরো জানান, একটি শিশু, শিশুটির মা এবং আরো এক নারীকেও অপহরণ করা হয়েছে।২০১৪ সালে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের চিবোক থেকে জঙ্গি সংগঠন বোকো হারাম ২৭৬ জন কিশোরীকে অপহরণের পর নাইজেরিয়ায় অপহরণ ঘটনা বেড়ে গেছে, যা আন্তর্জাতিক ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।উগ্রপন্থীদের পাশাপাশি উত্তর-পশ্চিম ও মধ্য নাইজেরিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকায় ডাকাত চক্রগুলোও সহিংসতা ছড়িয়ে দিচ্ছে। তারা মুক্তিপণের জন্য অপহরণ করে, গ্রামে হামলা চালায়, মানুষ হত্যা করে এবং লুটপাট শেষে ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। আবদুল্লাহির মতে চাচো গ্রামটি এর আগেও, অক্টোবরে, ডাকাতদের লক্ষ্যবস্তু হয়েছিল, তখন ১৩ জনকে অপহরণ করা হয়েছিল।তিনি ফোনে এএফপিকে জানান, ‘আমরা তাদের মুক্ত করতে মুক্তিপণ দিতে বাধ্য হয়েছিলাম।
এখন আবার একই পরিস্থিতির মুখোমুখি।’ এএফপির হাতে পাওয়া নাইজেরিয়ার একটি গোয়েন্দা প্রতিবেদনেও হামলার সত্যতা নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘নভেম্বর মাসে সোকটোতে ডাকাতদের হাতে অপহরণের ঘটনা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। গত এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।’ এতে ইঙ্গিত করা হয়েছে, পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলোর সঙ্গে ডাকাতদের কার্যক্রম বন্ধে করা কিছু সমঝোতাই হয়তো এই বৃদ্ধির জন্য আংশিকভাবে দায়ী।
নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের চুক্তির সমালোচনা করে আসছেন। তাদের মতে, এসব সমঝোতা ডাকাতদের আড়াল তৈরি করতে সাহায্য করে, আর তারা অন্য এলাকায় হামলা চালিয়ে যেতে পারে। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ‘ফলে কিছু ডাকাত কম সামরিক চাপযুক্ত এলাকায় সরে যেতে পারে। এই পরিস্থিতি সোকটোর মতো স্থানে আরো গণ-অপহরণের দিকে নিয়ে যায় এবং মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে গণ-অপহরণের ঘটনা বাড়িয়ে দেয়।’সূত্র : আলঅ্যারাবিয়া

আরও পড়ুন