অনলাইন ডেস্ক: নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করতে যাওয়ার পর দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। এতে ইউএনওসহ ৩ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলার গড়াডোবা ইউনিয়নে ইউপি কার্যালয়ের সামনে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।আহতরা হলেন- কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও ইমদাদুল হক তালুকদার, অভিযোগকারী সাংবাদিক মহিউদ্দিন, স্থানীয় প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক আব্দুল হালিম।
জানা যায়, গতকাল দুপুরে উপজেলার গড়াডোবা ইউনিয়নে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে আসেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুখময় সরকার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমদাদুল হক তালুকদার। দুর্নীতির অভিযোগকারীরা হলেন- সাংবাদিক মহিউদ্দিন, সাংবাদিক তানজিলা আক্তার রুবি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, তদন্তের শেষ পর্যায়ে শতাধিক উৎসুক জনতার সামনে সাংবাদিক মহিউদ্দিন ও একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হালিম মাস্টারের মধ্যে প্রথমে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে উত্তেজনা চরমে পৌঁছয়।
এ সময় মহিউদ্দিন হালিম মাস্টারের বুকে কিল-ঘুষি মারলে তিনি আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে বিক্ষুব্ধ জনতা সাংবাদিক মহিউদ্দিনকে পিটুনি দেন। তাকে রক্ষার্থে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমদাদুল হক তালুকদার তাৎক্ষণিক এগিয়ে এলে আহত হন।
আহত হালিম মাস্টার বলেন, ‘দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইউনিয়নে এসেছেন, তা জেনে আমি সেখানে যাই।সেখানে গিয়ে সাংবাদিক মহিউদ্দিনকে পেয়ে জিজ্ঞেস করি, ভাই আপনি তো মিথ্যা নিউজ করেছেন শুনলাম, বলতেই আমার বুকে কিল-ঘুষি মারে এবং আহত হয়ে আমি মাটিতে লুটিয়ে পড়ি। তা দেখে বিক্ষুব্ধ জনতা সাংবাদিক মহিউদ্দিনকে গণপিটুনি দিতে চেষ্টাকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমদাদুল হক তালুকদার তাকে রক্ষা করতে গিয়ে আহত হন।’সাংবাদিক তানজিলা আক্তার রুবি মুঠোফোনে বলেন, ‘সাংবাদিক মহিউদ্দিনের অবস্থা ভালো না। কয়েকবার বমি করেছে। অভিযোগকারী, আমি ও সাংবাদিক মহিউদ্দিন আগে থেকেই আতঙ্কিত ছিলাম।পূর্বের অভিযোগ ও আজকের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচার দাবি করছি।’
নেত্রকোনা সদর উপজেলার এমবিবিএস ডাক্তার মাজহারুল আমিন বলেন, ‘কেন্দুয়ার ইউএনও আহত হয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। ওনার হাতের একটি আঙুল মচকে গেছে। আর সাংবাদিক মহিউদ্দিন গুরুতর কোনো ধরনের আঘাত পাননি। তাকে প্রথমিক চিকিৎসা দিয়েছি। তিনি সিটি স্ক্যান করতে এখন ময়মনসিংহ চলে গেছেন।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমদাদুল হক তালুকদার বলেন, ‘গড়াডোবা ইউনিয়ন পরিষদের ৩টি বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট স্যার কর্তৃক তদন্ত চলাকালে কিছু দূরে মব দেখতে পাই। পরে জানতে পারি, এলাকাবাসীর সঙ্গে অভিযোগকারী মহিউদ্দিনের হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটে। তখন আমি এডিএম স্যারসহ সেখানে দৌড়ে গিয়ে উত্তেজনা প্রশমন করার চেষ্টাকালে ডান হাতের কনিষ্ঠ আঙুলে আঘাত পাই ও মচকে যায়। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’
