২৩শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

গয়েশ্বর : ফ্যাসিবাদের চেয়ে সাম্প্রদায়িক শক্তি বেশি খারাপ

অনলাইন ডেস্ক : ‘জামায়াত-শিবির বহুরুপী রাজনীতি করে। শেখ হাসিনার সরকারেও ছাত্রলীগ করেছে। এখন দেশের সব সেক্টর তাদের নিয়ন্ত্রনে রেখেছে। তাদের কারণে সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান হচ্ছে।ফ্যাসিবাদের চেয়ে সাম্প্রদায়িক শক্তি বেশি খারাপ।’—সম্প্রতি ‘স্ট্রেইট কাট’ প্রশ্ন শিরোনামের একটি অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে বিএনপির তুলনা করে গয়েশ্বর রায় বলেন, ‘ওরা যখন যেখানে রূপ ধারণ করার দরকার সেই রূপ ধারণ করতে পারে, যেটা আমরা পারি না। এটি ওদের কৌশল।ওরা ছাত্রলীগের পদ নিয়েও শিবির করছে, এখন দেখছেনই সব। আর আমরা ডাকসুতে পাশ করবো কি করবো না, আমরা কিন্তু আমাদের স্বনামে নির্বাচন করেছি। তাতে আমরা বুঝতে পারলাম যে ছাত্রদলের গ্রহণযোগ্যটা কতটুকু আছে। যেহেতু ছাত্রদল এই যে ১৬ বৎসর ক্যাম্পাসে যাইতে পারে নাই, ক্লাস করতে পারে নাই।
কিছুই করতে পারে নাই। তা এখন প্রশ্নটা হচ্ছে যে দলটা ১৭ বৎসর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘাসের উপর পা বাড়াতে পারে নাই সে স্বনামে দাঁড়াইছে। তো সুতরাং আমি মনে করি না যে আমরা ফেইল। কারণ ডাকসু নির্বাচন ৪৭ বছর বয়স বিএনপি ১৯৯৯ সালে একবারে জয় লাভ করছে। এর আগেও করে নাই পরেও করে নাই।তাতে বিএনপির ক্ষমতায় আসা কিন্তু আটকায় থাকেন নাই।’
জামায়াত দেশজুড়ে নিজেদের অবস্থান শক্ত করার চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত তারা সফল হবে না, এমনকী দেশের নারীরাও তাদের মানবে না উল্লেখ করে বিএনপির এ সিনিয়র নেতা বলেন, ‘আমি মনে করি আমাদের নারী সমাজ সতর্ক। ধর্মীয় কিছু কুসংস্কারের কারণে নারীরা যে আবদ্ধ ছিল, অনেক কিছুতে যাইতে পারে নাই, জিয়াউর রহমান সাহস করে এসব থেকে বের করে এনেছেন। পৃথিবীতে প্রথম পাইলট বাংলাদেশের নারী হইছে এটা জিয়াউর রহমানের আমলে। তিনি সেনাবাহিনীতে নিয়েছেন, তিনি পুলিশে নিয়েছেন। এখন জামায়াতের যে রাজনীতি বোরকা পইরা থাকা, হিজাব পরে থাকা, একটা পুলিশ অফিসারকে হিজাব পরে পুলিশে চাকরি করতেছে? তারা একটা পুরুষের মত পড়ে রাস্তায় হাটতেছে না? আজকে নারীরা সব জায়গায় তার মেধার যোগ্যতা দিয়ে পুরুষদের হার মানাচ্ছে না? অনেক জায়গায় তার প্রতিভা বিকাশ ঘটছে। সুতরাং ধর্মীয় কুসংস্কারের মধ্য দিয়ে এই যে নারীর প্রতিভাটা, নারীর যে অধিকারটাকে বাধাগ্রস্ত করে, এটাতো নারীরা মানবে না। আমাদের দেশের নারী সমাজ সে যেই ধর্মেরই হোক, পুরুষের চেয়ে বেশি ধর্মপ্রাণ। এই নারীরা রোজার মধ্যে রান্না করে। এই নারীরা ইফতার তৈরি করে। এই নারীরা রোজাও রাখে। তারা নিষ্ঠার সাথে নারীরা করে। সেই নারীকে আপনি নানা অধিকার থেকে বঞ্চিত করবেন। এটা কি নারী সমাজ মানবে?’
গয়েশ্বর রায় আরো বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক শক্তি যদি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে তাহলে আমাদের দেশ নিরাপদ না, সমাজটা নিরাপদ না, নারী সমাজ নিরাপদ না। এমনকি সার্বভৌমত্ব নিরাপদ না। ফ্যাসিবাদের চেয়ে সাম্প্রদায়িক শক্তি বেশি খারাপ। অনেক বেশি খারাপ।’
আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধের ব্যাপারে গয়েশ্বর বলেন, ‘কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করে সমস্যার সমাধান হয় না। রাজনৈতিক দল নিঃশ্বাস হয় অথবা প্রাণবন্ত হয় শক্তি সঞ্চয় করে জনগণের ইচ্ছায়। একসময় দাপটের দল ন্যাশনাল আম পার্টি মাওলানা ভাষানী এখন কোথাও সাইনবোর্ড পাওয়া যায় না। একসময় ইউনাইটেড পিপলস পার্টি হারিকেন দিয়ে খুঁজে পাওয়া যায় না। তাই না? সুতরাং সবচেয়ে বড় জিনিস হলো সঠিকভাবে গণতান্ত্রিক চর্চা থাকলে পিপলস উইল ডিসাইড, যে কে দেশের জন্য প্রয়োজন কে প্রয়োজন না। জামায়াতে ইসলামকে নিষিদ্ধ করে নাই আওয়ামী লীগ? জামায়াত ইসলাম কি চলে গেছে? জামায়াত ইসলাম তো দাপটে আছে, মনে হয় ক্ষমতায় আছে তারাই। যেকোনো প্রশাসনে যাবেন, যেখানেই যাবেন, রদবদলে যাবেন- জামায়াতের কথার বাইরে নড়ে চলে না। স্বাস্থ্যখাত নড়ে চড়ে না। শিক্ষাখাত নড়ে চড়ে না। সব ভিসি জামায়াতের। এই ১৭ বছর এত জামায়াত শেখ হাসিনার আচলের ছায়ায় কিভাবে থাকলো? যেখানে পোস্টমর্টেম করে ছাঁটাই করেছে।’

আরও পড়ুন