প্রযুক্তি ডেস্ক : ১০০ বছর আগেই আবিষ্কৃত হয়েছে স্কুইড প্রজাতিটি। তবে প্রথমবারের মতো বিশাল এ স্কুইডের ভিডিও ধারণ করেছেন বিজ্ঞানীরা। দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরের সাউথ স্যান্ডউইচ দ্বীপপুঞ্জের কাছে ৬০০ মিটার বা এক হাজার ৯৬৮ ফুট গভীরতায় ৩০ সেন্টিমিটার বা ১১.৮ ইঞ্চি লম্বার এই কিশোর স্কুইডটির ভিডিও করা সম্ভব হয় বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিবিসি।মার্চ মাসে নতুন সামুদ্রিক প্রাণ খুঁজে বের করার লক্ষ্যে ৩৫ দিনের অভিযানের সময় স্কুইডটির ফুটেজ রেকর্ড করেছে ‘এসেক্স ইউনিভার্সিটি’র একজন শিক্ষকের নেতৃত্বে বিজ্ঞানীদের একটি দল।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশাল এই স্কুইডের আকার ৭ মিটার বা ২৩ ফুট পর্যন্ত হতে পারে এবং এর ওজন পাঁচশ কেজি, যা এদের পরিণত করেছে পৃথিবীর সবচেয়ে ভারী অমেরুদণ্ডী প্রাণীতে। এটি শনাক্তের জন্য একটি রিমোট নিয়ন্ত্রিত যান ব্যবহার করেছেন ‘শ্মিট ওশান ইনস্টিটিউট’-এর ‘ফ্যালকর’ নামের জাহাজের ক্রুরা।
‘এসেক্স ইউনিভার্সিটি’র প্রধান বিজ্ঞানী ড. মিশেল টেইলর বলেছেন, স্কুইডটি আসলে কী সে বিষয়ে শুরুতে কোনো ধারণাই ছিল না গবেষক দলটির। তারা কেবল “সুন্দর ও অস্বাভাবিক” হওয়ার কারণে এর ভিডিও করেছেন।
এরপর ভিডিওটি যাচাই করে ‘অকল্যান্ড ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি’র ‘সেফালোপড ইকোলজি অ্যান্ড সিস্টেমেটিক্স’ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. ক্যাট বোলস্টাড বলেছেন, এর আগে স্কুইডের মুখোমুখি হওয়ার নানা ঘটনা বেশিরভাগই তিমি ও সামুদ্রিক পাখির পেটে থাকা দেহাবশেষের মতো ছিল।
“বিশাল আকৃতির এক কিশোর স্কুইডের সামুদ্রিক পরিবেশে প্রথমবারের মতো ফুটেজ দেখার বিষয়টি খুবই রোমাঞ্চকর। ভাবতে অবাক লাগে, মানুষের অস্তিত্ব সম্পর্কে এদের কোন ধারণাই নেই।”
গবেষকরা বলছেন, বিশাল স্কুইডের জীবনচক্র সম্পর্কে খুব কমই জানা যায়। তবে শেষ পর্যন্ত কিশোর বেলার এই স্বচ্ছ চেহারা হারিয়ে ফেলে এরা। এ প্রজাতির আরেকটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এদের আটটি বাহুর মাঝখানে রয়েছে হুকের উপস্থিতি।এর আগে, মাছ ধরার সময় মৃত স্কুইড প্রজাতিটির বড় বেলার ছবি তোলা হয়েছে। তবে এত গভীরতায় কখনও জীবিত দেখা যায়নি এদের।
‘ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম’ বলছে, বিশাল আকারের এই স্কুইডের বৈশ্বিক সংখ্যা অনুমান করা কঠিন।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, জানুয়ারিতে প্রথমবারের মতো একটি গ্লেশিয়াল গ্লাস স্কুইডের ফুটেজ ধারণ করেছেন তারা।
‘স্মিট ওশান ইনস্টিটিউট-এর নির্বাহী পরিচালক ড. জ্যোতিকা ভিরমানি বলেছেন, “পরপর অভিযানে দুটি ভিন্ন স্কুইডের প্রথম দর্শনের বিষয়টি অসাধারণ এবং দক্ষিণ মহাসাগরের এই চমৎকার বাসিন্দাদের আমরা কত কম দেখেছি তারই প্রমাণ এটি।
“এ বিস্ময়কর বিভিন্ন মুহূর্ত আমাদের মনে করিয়ে দেয়, এখনও অমীমাংসিত রহস্যে ভরে আছে সমুদ্র।”
